আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা ফিজিওথেরাপি ৷ ফিজিও অর্থ শরীর এবং থেরাপি অর্থ চিকিৎসা, অর্থাৎ ফিজিওথেরাপি অর্থ হলো শারিরীক চিকিৎসা ৷বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে, একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট মাংশপেশীর কাজের উন্নতি ও পুনরুদ্ধার, চলাফেরার ক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাথা নিরাময়, ইনজুরি এবং অন্যান্য বিকলতা সম্বন্ধীয় শারিরীক সমস্যার প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার জন্য অ্যাসেসমেন্ট (রোগ নির্নয়) করেন, পরিকল্পনা করেন এবং পুনর্বাসন প্রোগ্রামগুলো প্রয়োগ করেন ৷ ফিজিক্যাল মেথড বলতে বুঝায় – থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, স্পেশাল ম্যনুয়াল মেথড, ইলেক্ট্রোথেরাপি, হাইড্রোথেরাপি, আইস থেরাপি, লেজার থেরাপি, সঠিক অঙ্গবিন্যশের (posture) ট্রেনি, অর্থোসিস এবং প্রসথেসিস এর ব্যাবহার ইত্যাদি ৷ WHO এর ওয়েব সাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে ফিজিওথেরাপি একটি সতন্ত্র পেশা এবং একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট ফার্স্ট কন্টাক্ট প্র্যাকটিশনার ৷ অর্থাৎ, একজন রোগী কোন প্রকার রেফারেল ছাড়াই সরাসরি ফিজিওথেরাপিষ্টের কাছ থেকে চিকিৎসা নিতে পারবেন ৷সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে পরিচালিত একটি গবেষনায় দেখা যায়, যারা ব্যাথা, অবশতা এবং ইনজুরির জন্য সরাসরি ফিজিওথেরাপিষ্টের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের চিকিৎসা খরচ ৬০ শতাংশ কম হয়েছে ৷ এক্ষেত্রে ইনফেকশন সম্পর্কীয় ব্যাথার রোগীগুলো অন্যান্য স্পেশালিস্টের কাছে রেফার করা হয়েছে ৷২. ফিজিওথেরাপি কেন প্রয়োজন?আমাদের শরীরে মাঝেমধ্যে গঠনগত কিছু পরিবর্তন হয়, মাংসপেশির দুর্বতলতা বা অন্যকোন ধরনের পরিবর্তন হয় যা ওষুধে ভালো হয় না সেসব ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি একমাত্র চিকিৎসা ৷ ওষুধ সাময়িক সময়ের জন্য ব্যাথামুক্ত রাখতে পারে, কিন্তু গঠনগত পরির্বতন বা মাংশপেশীর দুর্বলতা কখনো ওষুধে ভালো করতে পারে না ৷ বরং দীর্ঘদিন ব্যাথার ওষুধ সেবনে কিডনী নস্ট হতে পারে কিবাং হতে পারে আলসার, এ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট ৷৩. যেসব রোগের জন্য ফিজিওথেরাপি বেশি প্রয়োজন তা হলো -অর্থোপেডিক: ঘাড়, কোমর ও হাটু ব্যাথা, বাত ব্যাথা, কোন জয়েন্টে – ব্যাথা, ফুলে যাওয়া কিংবা শক্ত হয়ে যাওয়া, অপারেশনের আগে ও পরে, প্লাস্টারের পরে লিম্ব শক্ত হয়ে যাওয়া কিংবা সোজা করতে না পারা, PLID, অস্টিও-আথ্রাইটিস ইত্যাদি।নিউরোলজিক্যাল:স্ট্রোক, জিবিএস, বেলস্ পালসি, পারকিনসনিজম, নার্ভ ইনজুরি, মাসকুলার ডিসট্রফি, মাংসপেশির দূর্বলতা, ঝিনঝিন করা কিংবা অবশতা, হাত পা শুকিয়ে যাওয়া, কথা বলতে না পারা ইত্যাদি ৷পেডিয়াট্রিক:সেরিব্র্যাল পালসি, জন্মগত বিকলতা, ক্লাবফুট,অটিজম ইত্যাদি ৷এছাড়াও জটিলতা মুক্ত বাচ্চা প্রসব এবং বাচ্চা জন্মের পরে মায়ের জটিলতা গুলো কাটিয়ে উঠে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে গাইনেকোলজিক্যাল ফিজিওথেরাপি বিশেষ ভূমিকা পালন করে ৷ফিজিওথেরাপি কোন প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিহীন বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা ব্যাবস্থা ৷ কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ফিজিওথেরাপিতে ব্যাচেলর ডিগ্রীধারীগন ফিজিওথেরাপিষ্ট হিসাবে বিবেচিত হন ৷ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হলে কমপক্ষে একজন ডিগ্রীধারী ফিজিওথেরাপিস্টের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চিকিৎসা নিন । #Copy