— নিম্নাঙ্গের সুবৃহৎ নিতম্ব বা সায়াটিকা স্নায়ুর অন্তঃপ্রদাহ ( ইন্টারস্টিসিয়াল ইনফ্লামেশন ) জনিত যন্ত্রণাদায়ক তীব্র জ্বালাময় বেদনাকে নিতম্ব-বেদনা বা সায়াটিকা নামে অভিহিত করা হয় । এই বেদনা উক্ত স্নায়ু ও তাহার শাখা প্রশাখা সর্বত্র অনুভুত হয় এবং ইহা দীর্ঘকাল স্থায়ী হইলে উক্ত স্নায়ু ও তাহার শাখা প্রশাখা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত স্থানসমূহের স্পর্শ-চেতনা লোপ ও পেশী-শীর্ণতা ( অ্যাট্রাফি ) সংঘটিত হয় । অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেহের এক পার্শ্ব আক্রান্ত হয় । উভয় পার্শ্ব আক্রান্ত হইলে তাহাকে ডবল সায়াটিকা বলা হয় – ইহা অতিশয় বিরল ।কারণ-তত্ত্ব ঃ – নিউরাইটিসের কারণরূপে বর্ণিত সকল কারনেই ইহার উদ্ভব হইতে পারে । অধিকিন্তু অত্যধিক হাঁটাহাঁটি, কোষ্ঠবদ্ধতা, উপদংশ, মেরুদণ্ডের নিচের অংশে বা বস্তিপ্রদেশের অস্থিসমূহের ক্ষয়রোগ বা টিউবারকিউলোসিস, বস্তিমধ্যে অর্বুদ বা ভ্রুনের চাপ অথবা অস্থি-সন্ধিসমূহের প্রদাহ, উরু-সন্ধির ব্যাধি বা হিপ-জয়েন্ট ডিজিজ, অস্থিসমূহের গঠন-বিকৃতি, খাদ্যদ্রবে ভাইটামিনের অভাব, প্রভৃতিও ইহার কারণের মধ্যে পরিগণিত । সাধারণত বয়স্ক বা অ্যাডলট পুরুষগনই এই রোগে অধিক আক্রান্ত হয় । সন্তান প্রসবের পর প্রসূতিরও এই ব্যাধির অনুরূপ লক্ষণাদি প্রকাশ পাইতে পারে ।মুখ্যভাবে ইহার আক্রমণ অতিশয় বিরল, ইহা প্রধানত গ্রন্থিবাত ( গাউট ) ও বহুমূত্র রোগীগনের মধ্যেই সংঘটিত হয় । লক্ষণাবলী – কটিদেশে স্নায়ুর প্রবেশস্থান হইতে পিছনদিকে জানুর মধ্যস্থল পর্যন্ত বিস্তৃত হ্রাস-বৃদ্ধিশীল, সর্বক্ষণস্থায়ী কষ্টকর, জ্বালাময় বেদনা ইহার প্রধান লক্ষণ । এই বেদনা প্রথমে কটিদেশে ধীরে ধীরে অথবা হঠাৎ তীব্রভাবে প্রকাশ পায়, পরে উহা নিন্মাভিমুখী হইয়া স্নায়ুর গতিপথ ধরিয়া পিছনদিকে জানুর মধ্যস্থল পর্যন্ত বিস্তৃত হয় ; কখনও কখনও পদাঙ্গুলি পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করিতে পারে । বেদনার সহিত ঝিনঝিন ও অসাড়তা এবং কখনও কখনও মৃদু জ্বর বর্তমান থাকে । রাত্রিকালে ও নড়াচড়া করিলে বা হাঁটাহাঁটি করিলে বেদনার তীব্রতা সমধিক বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় । আক্রান্ত পার্শ্বের পদ প্রসারিত করিলেও বেদনার বৃদ্ধি হয় – এজন্য রোগী জানু ঋজু করিয়া গোড়ালি পাতিয়া চলিতে পারে না, সুস্থপদের উপর ভর দিয়া খোঁড়াইয়া চলে ; শয়নকালেও হাঁটু মুড়িয়া শয়ন করিতে বাধ্য হয় । তীব্র আক্রমণে রোগী শয্যাশায়ী হইয়া পড়ে । স্নায়ুটির উপর চাপ প্রদান করিলেও বেদনা বোধ হয় । কখনও কখনও পেশীমধ্যে খালধরার ন্যায় বেদনা ও কম্পন অনুভুত হয় । রোগ দীর্ঘকাল স্থায়ী হইলে পেশীসমূহ শীর্ণ ও দুর্বল এবং পেশীচমক লুপ্ত হয় । কখনও কখনও লাম্বার মেরুদণ্ড আড়ষ্ট হইয়া পড়ে ও তথাকার পেশীতে চাপ দিলে বেদনা বোধ হয় । ভোগ কাল – সাধারণত এই রোগ দুর্দমনীয় ; ইহার ভোগকাল কয়েক মাস, এমন কি হ্রাস-বৃদ্ধি সহ কয়েক বৎসর ধরিয়া চলিতে পারে । একবার আক্রমণ হইলে ইহার পুনরাক্রমণ বিরল নহে এবং একপার্শ্বের স্নায়ুর আক্রমণ প্রতিরুদ্ধ হইয়া অপর পার্শ্বের স্নায়ু আক্রান্ত হইতে পারে । রোগ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হইলে রোগী শয্যাগত হইয়া পড়ে । রোগ নির্ণয় – রোগ নির্ণয় কার্যে রোগ মুখ্য অথবা গৌণ এবং রোগের কারণ নির্ধারণ করা প্রথমে আবশ্যক । তৎপরে রোগীকে পরীক্ষা করিয়া তাহার সায়াটিকা স্নায়ুর উপর চাপ দিলে বেদনা বোধ, স্পর্শচেতনার হ্রাস, পেশীর শীর্ণতা প্রভৃতি দ্বারা রোগ নির্ণয় হয় । বেদনার তীব্রতায় লোকোমোটার অ্যাটাক্রিয়া বলিয়া ভ্রম হইতে পারে কিন্তু তাহা তীব্র হইলেও ক্ষণস্থায়ী । হিপ-জয়েন্ট, সেক্রো-ইলিয়াক জয়েন্ট, প্রভুতি সন্ধি-সমূহের ব্যাধিতে বেদনা ব্যাধিগ্রস্ত স্থানে সীমাবদ্ধ থাকে ও স্নায়ুর উপর চাপ দিলে বেদনা বোধ হয় না এবং রঞ্জন রশ্মি বা এক্স-রে দ্বারা গৃহিত প্রতিচ্ছিতে প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ পায় । বস্তিমধ্যে অর্বুদাদির চাপবশত হইলে তাহা সরলান্ত্রপথে পরীক্ষায় নির্ণয় করা যায় । চিকিৎসা – রোগের কারণ নির্ধারণ করিয়া তাহার সংশোধন চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত । গ্রন্থিবাত ও বহুমূত্রের সহিত সংশ্লিষ্ট রোগে উক্ত রোগসমূহের চিকিৎসা সমভাবে প্রয়োজন । রোগীর সম্পূর্ণ বিশ্রাম বিশেষ প্রয়োজন – এজন্য তাহার আক্রান্ত পা যে অবস্থানে রাখিয়া সে বিশেষ স্বস্তি বোধ করে সেই অবস্থায় তাহাকে শয়ন করাইয়া রাখিতে হইবে । সেঁক তাপে যন্ত্রণার আরাম হইলে সেঁক দেওয়ার ব্যবস্থা করিতে হইবে । ধাতুদোষ নিরাকরনের চেষ্টা ও সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি পালন বিশেষ প্রয়োজন । লক্ষণ সাদৃশ্যে হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করিতে পারিলে অল্প সময়ের মধ্যে রোগী আরোগ্য হয় । পুনর্বার আক্রমণের সম্ভাবনাও কম থাকে । ঔষধাবলী – নিন্মে সায়াটিকার কতকগুলি প্রয়োজনীয় ঔষধের সংক্ষিপ্তসার প্রদত্ত হইলঃ –একোনাইট – ঠাণ্ডা লাগিয়া হঠাৎ বেদনাসহ আক্রান্ত অঙ্গের পদাঙ্গুলি পর্যন্ত ঝিনঝিন ও অসাড়তা বোধ হয়; বেদনা রাত্রে অতিশয় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও তৎসহ রোগী অস্থিরতা ও উদ্বেগ প্রকাশ এবং যন্ত্রণায় চিৎকার করে ।এমন মিউর – বাম পার্শ্বের সায়াটিকা ; বসিয়া থাকিলে বেদনা অত্যধিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও চলিবার সময় কিঞ্চিৎ পরিমাণে এবং শয়ন করিলে সম্পূর্ণ উপশম বোধ হয় ; বাম বস্তি-সন্ধি হইতে পেশী-বন্ধনী সঙ্কোচনবশতঃ খোঁড়াইয়া চলিতে হয় । আর্সেনিক – ইহা সায়াটিকার একটি বিশেষ নির্ভরযোগ্য ঔষধ । প্রত্যহ মধ্যরাত্রির পর বেদনা বৃদ্ধি পাইয়া অসহনীয় হইয়া উঠে ও তৎসহ জ্বালা বোধ হয় ; শীতলতায় বেদনার বৃদ্ধি এবং তাপ প্রয়োগে ও ধীরে ধীরে অঙ্গচালনায় হ্রাস প্রাপ্ত হয় । রোগী আক্রান্ত পার্শে কাত হইয়া শয়ন করিতে পারে না । বেলেডোনা – হঠাৎ বেদনার আক্রমণ ও হঠাৎ তিরোধান ; স্নায়ুর গতিপথে বেদনা, স্পর্শে অসহনীয়, মৃদ বায়ু স্পর্শ বা ঝাঁকি লাগিলে বেদনার বৃদ্ধি ; অপরাহ্ণে বা সন্ধ্যায় বেদনার আক্রমণ হয় ও রাত্রে তাহা দুরন্ত হইয়া উঠে > রোগী যন্ত্রণায় ছটফট করে, গোলমাল ও আলোক, এমন কি গাত্রাবরণও সহ্য করিতে পারে না ; পা ঝুলাইয়া দিলে, উত্তাপ প্রয়োগে অথবা দণ্ডায়মান হইলে উপশম বোধ হয় । ব্রায়োনিয়া – স্থির থাকিলে বেদনার উপশম ও নড়াচড়া করিলে বেদনার বৃদ্ধি ; আক্রান্ত পার্শ্ব চাপিয়া অবস্থানে উপশম ।ক্যামোমিলা – বাম পার্শ্বের সায়াটিকা ; তীব্র বেদনা সহ অসাড়তা বোধ ; চলাফেরা করিলে ও রাত্রে বৃদ্ধি ; বেদনার তীব্রতায় রোগী উম্মাদের ন্যায় ব্যবহার করে ও সকলের প্রতি রুঢ় ব্যবহার করে । কলোসিন্থ – ইহা সায়াটিকার একটি বিশিষ্ট ঔষধ । দক্ষিণ পার্শ্বের সায়াটিকা । বেদনা হটাৎ আক্রমণ করিয়া স্থিরভাবে অবস্থান করে এবং মধ্যে মধ্যে বৃদ্ধি পাইয়া অসহনীয় হইয়া উঠে ; হাঁটু অথবা গোড়ালি পর্যন্ত প্রসারিত হয় ; আক্রমণের পর পায়ের অসাড়তা ও পক্ষাঘাতের ন্যায় অবশতা প্রকাশ পায় ; সামান্য নড়াচড়ায় , স্পর্শে বা ঠাণ্ডা লাগা, ক্রোধে, বিরক্তি, প্রভৃতি কারনে বেদনার উপচয় > সম্পূর্ণ বিশ্রাম ও উত্তাপ প্রয়োগে উপশম । ফেরাম মেট – সন্ধ্যা হইতে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত বাম উরু বা হিপ-সন্ধি মধ্যে তীব্র বেদনা ; রোগী স্থির থাকিতে পারে না, ধীরে ধীরে চলিওয়া বেড়াইলে উপশম বোধ করে, কিন্তু প্রথমে পা ছোঁয়াইতে পারে না ; সায়াটিকা সহ বাম স্কন্ধে বেদনা ; রোগীর মুখমণ্ডল রক্তহীন হইলেও সহজেই তাহা আরক্তিম হয় । ন্যাফেলিয়াম – সর্ববিধ লক্ষণে ইহা কলোসিন্থের অনুরূপ । বেদনা উপশম হইলে অসাড়তা ও চলিতে অক্ষমতা প্রকাশ পায় ; শয়নে, নড়াচড়ায় ও হাঁটিলে বেদনা বৃদ্ধি ; পা ঝুলাইয়া চেয়ারে বসিলে উপশম । হাইপেরিকাম – পড়িয়া গিয়া মেরুদণ্ডাস্থির নিম্নদেশ বা ককসিক্সে আঘাত লাগা হেতু তীব্র সায়াটিকা > বেদনা বশতঃ হাঁটিতে বা অবনত হইতে অক্ষমতা ; পদতলে সূচীবিঁধনবৎ যন্ত্রণা । ইগ্নেসিয়া – দীর্ঘকালস্থায়ী সায়াটিকা ; গ্রীষ্মকালে উপশম, শীতকালে বৃদ্ধি ; উরু-সন্ধি মধ্যে দপদপানি বেদনা ; প্রথমে একদিন অন্তর ও পরে প্রত্যহ বেদনার আক্রমণ সহ শীতবোধ ও পিপাসা । ক্যালি বাইক্রোম – বাম পার্শ্বের সায়াটিকা ; চলিবার কালে ও পা মুড়িয়া রাখিলে উপশম ; দাঁড়াইলে, বসিলে বা শয়নে বৃদ্ধি, উরু-সন্ধি হইতে জানু পর্যন্ত বিস্তৃত তীব্র বেদনা ( ক্যালি কার্ব ) ।ক্যালি আয়োড – রাত্রিকালে ও আক্রান্ত পার্শ্বে শয়নে বেদনার বৃদ্ধি > চলিয়া বেড়াইলে উপশম ; দক্ষিণ জঙ্ঘা ও হাঁটুতে ছিন্নকরণবৎ তীব্র যন্ত্রণা ; পারদ ও উপদংশ বিষদুষ্ট ধাতু । ল্যাকেসিস – প্রধানতঃ বাম পার্শ্বের আক্রমণ ; নিদ্রামধ্যে বেদনার বৃদ্ধি ; বেদনা পুনঃপুনঃ স্থান পরিবর্তন করিয়া কখনও মস্তকে, কখনও দন্তে, কখনও বা সায়াটিকা স্নায়ু আক্রমণ করে ও তৎসহ অস্থিরতা ও প্রবল হৃদস্পন্দন প্রকাশ পায় ; স্থির হইয়া শয়ন করিয়া থাকিলে উপশম বোধ হয় ।লিডাম – বেদনা পদতল হইতে ঊর্ধ্বমুখে ধাবিত হয় ও তৎসহ পদতলে অত্যধিক স্পর্শকাতরতা ; শয্যার উত্তাপে ও স্পর্শ করিলে বৃদ্ধি > শীতলতায় উপশম ; আক্রান্ত অঙ্গ শীতল বোধ হয় । লাইকোপোডিয়াম – পুরাতন সায়াটিকা ; আক্রান্ত পার্শে চাপ দিয়া শয়নে বা উপবেশনে ও দণ্ডায়মান অবস্থায় বৃদ্ধি – পদ বিস্তৃত করিতে পারে না ; বিশ্রামে বৃদ্ধি > চলিতে থাকিলে উপশম ।ম্যাগ্নেসিয়া ফস – শয়ন করিলেই তীব্র বেদনার জন্য কেবলই দাঁড়াইয়া থাকিতে বাধ্য হয় ; বেদনা হঠাৎ উপস্থিত হয় ও হঠাৎ তিরোহিত হয় ; উত্তাপ প্রয়োগে উপশম ।মার্ক – সল – রাত্রিকালে, বিশেষতঃ শয্যার উত্তাপে বেদনার বৃদ্ধি সহ অস্থিরতা ও উপশম বিহীন প্রচুর ঘর্ম ; জিহ্বায় দাঁতের ছাপযুক্ত, মুখমধ্যে দুর্গন্ধ ; পিপাসাহীনতা ।মেজেরিয়াম – উরু সন্ধি হইতে জানু পর্যন্ত তীব্র বেদনা – মনে হয় যেন পেশী টানিয়া ছিঁড়িয়া ফেলিতেছে ; স্পর্শে, নড়াচড়ায়, সন্ধ্যায় ও রাত্রে বৃদ্ধি ; মুক্তবায়ুতে ও রাত্রি প্রভাত হইলে উপশম ।নাক্স ভমিকা – বেদনা নিম্ন হইতে ঊর্ধ্বাভিমুখে অথবা ঊর্ধ্ব হইতে পদতল পর্যন্ত ধ্যাবিত হয় ও তৎসহ আক্রান্ত অঙ্গ আড়ষ্ট, সঙ্কুচিত, অবশ ও শীতল বোধ হয় ; কোষ্ঠবদ্ধতা > মলত্যাগ কালে ও প্রত্যূষে এবং আক্রান্ত পার্শ্ব চাপিয়া শয়নে বৃদ্ধি ( ব্রায়োনিয়া – বিপরীত ) । প্লাম্বাম – আক্রান্ত অঙ্গের শীর্ণতা ও অবশতা সহ পুরাতন সায়াটিকা রাত্রিকালে, উত্তাপ প্রয়োগে, নড়াচড়া ও মৃদু চাপে বৃদ্ধি – মর্দনে উপশম ; কোষ্ঠবদ্ধতা, প্রলেপক জ্বর, শুষ্ক কাসি, অত্যধিক দুর্বলতা ।পালসেটিলা – বাম পার্শ্বের সায়াটিকা ; সন্ধ্যায় ও রাত্রিকালে এবং উষ্ণ গৃহমধ্যে ও স্থির থাকিলে বৃদ্ধি > মুক্ত বায়ুতে ধীরে ধীরে চলিয়া বেড়াইলে উপশম ; বেদনা যত তীব্র হয় ততই শীত বোধ হয় ; পিপাসাহীনতা ।র্যনানকিউলাস – ঝড়-বাদলার দিনে বেদনার বৃদ্ধি ; চলিয়া বেড়াইলে বেদনা বৃদ্ধি, বিশ্রামে হ্রাস পায় না । রাস টক্স – বৃষ্টিতে ভেজা, ভারী জিনিস উত্তলন জনিত টান লাগা, প্রভৃতি কারনে সায়াটিকা > বিশেষত রোগ দীর্ঘস্থায়ী হইলে বিশেষ উপযোগী । রাত্রিকালে, আক্রান্ত পার্শ্বে শয়নে, মুক্ত বায়ুতে ও বিশ্রামে বৃদ্ধি > শুষ্ক উত্তাপ প্রয়োগ ও চলিয়া বেড়াইলে উপশম, কিন্তু চলিবার উপক্রমে বৃদ্ধি ।রুটা – বসিলেই অথবা শয়ন করিলেই বেদনা তীব্রতর হইয়া উঠে এবং মনে হয় যেন অস্থিসমূহ চূর্ণ হইয়া যাইবে > এজন্য ক্রমাগত চলিয়া বেড়াইতে হয় ; আদ্র, শীতল আবহাওয়ায় ও শীতলতা প্রয়োগে বেদনার বৃদ্ধি ; আঘাত জনিত সায়াটিকা ( আর্ণিকা ) ।সাইলিসিয়া – হাঁটিবার জন্য পা উঠাইলেই তীব্র বেদনা বোধ ।সিপিয়া – অন্তঃসত্তাবস্থায় অথবা জরায়ুরোগ সহ সায়াটিকা ( পালস, ফেরাম, গ্র্যাফাইটিস ) ; পুরাতন সায়াটিকা > বেদনা আক্রান্ত অঙ্গের গুলফ দেশে সীমাবদ্ধ থাকে ; বিশ্রামে উপশম ।ষ্টিলিঞ্জিয়া – উপদংশ বিষদুষ্ট ব্যক্তিগনের বাম পার্শ্বের সায়াটিকা । টেলুরিয়াম – বাম পার্শ্বের সায়াটিকা সহ সমগ্র মেরুদণ্ডে বেদনা ; মলত্যাগকালে, হাঁসিতে কাশিতে বা আক্রান্ত পার্শ্বে শয়নে বৃদ্ধি । ভিরেট্রাম অ্যালবাম – বেদনার প্রচণ্ডতায় রোগী ক্ষিপ্তপ্রায় হইয়া উঠে এবং চলিয়া বেড়াইতে বাধ্য হয় ; শেষরাত্রি ৩ ঘটিকায় বৃদ্ধি > বসিয়া পা ঝুলাইয়া দিতে বাধ্য হয় ।ভিস্কাম অ্যালবাম – বামপার্শ্বের প্রচণ্ডতম সায়াটিকা ; ইহা দ্বারা বহু রোগী আরোগ্য হইয়াছে ।